মস্তিষ্ক থেকেই Phone calls করা যাবে কিভাবে

প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিনিয়ত অভাবনীয় উদ্ভাবন ঘটে চলেছে, কিন্তু ইলন মাস্কের কোম্পানি নিউরালিংক (Neuralink) যে প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, তা সত্যিই যুগান্তকারী। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের সাথে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে আপনি শুধু মনে মনে চিন্তা করলেই Phone calls, মেসেজ পাঠানো বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করতে পারবেন! এই প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে, এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো কী—সবকিছুই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এই প্রবন্ধে।
নিউরালিংক কী?
নিউরালিংক হলো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত একটি নিউরোটেকনোলজি কোম্পানি, যা মস্তিষ্ক-কম্পিউটার ইন্টারফেস (Brain-Computer Interface, BCI) নিয়ে গবেষণা করছে। এই প্রযুক্তির মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মস্তিষ্ককে যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত করে যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণকে আরও সহজ করে তোলা।
নিউরালিংকের উদ্দেশ্য
- স্নায়বিক রোগের চিকিৎসা (প্যারালাইসিস, আলঝেইমার, পার্কিনসন্স ইত্যাদি)।
- মানুষের স্মৃতি ও চিন্তা শক্তিকে ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ করা।
- মস্তিষ্কের মাধ্যমে সরাসরি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ।
মস্তিষ্ক দিয়ে Phone calls কীভাবে কাজ করে?
নিউরালিংকের প্রযুক্তি মূলত মাইক্রোস্কোপিক ইলেক্ট্রোড ব্যবহার করে, যা মস্তিষ্কের নিউরনের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। এই ইলেক্ট্রোডগুলি মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক সংকেতকে ডিজিটাল সিগনালে রূপান্তর করে, যা পরে একটি ডিভাইস (যেমন স্মার্টফোন বা কম্পিউটার) দ্বারা প্রক্রিয়াজাত হয়।
কাজ করার পদ্ধতি
- ইমপ্লান্ট স্থাপন:
- মস্তিষ্কের উপরের অংশে একটি ছোট চিপ (নিউরাল লিঙ্ক) ইমপ্লান্ট করা হয়।
- এই চিপে হাজার হাজার সুপার থিন ইলেক্ট্রোড থাকে, যা নিউরনের সাথে সংযোগ করে।
- সিগন্যাল রিডিং:
- যখন আপনি কোনো কথা বলার বা Phone calls করার কথা ভাবেন, মস্তিষ্কের সংশ্লিষ্ট নিউরন সক্রিয় হয়।
- চিপ এই সিগন্যালগুলোকে ক্যাপচার করে ওয়্যারলেসভাবে একটি ডিভাইসে পাঠায়।
- কমান্ড এক্সিকিউশন:
- ডিভাইসটি সিগন্যালকে ডিকোড করে Phone calls বা অন্য কোনো কাজ সম্পন্ন করে।
- উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি মনে মনে “মাকে কল করো” ভাবেন, সিস্টেমটি অটোমেটিকally আপনার মায়ের নম্বরে কল করে দেবে।
এই প্রযুক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার
১. স্বাস্থ্য খাতে বিপ্লব
- প্যারালাইজড রোগীদের সাহায্য: যারা কথা বলতে বা নড়াচড়া করতে অক্ষম, তারা মস্তিষ্কের সংকেত দিয়ে কম্পিউটার বা প্রস্থেটিক হাত-পা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
- স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনা: আলঝেইমার রোগীদের জন্য এটি একটি বড় আশীর্বাদ হতে পারে।
২. যোগাযোগের নতুন মাধ্যম
- টেলিপ্যাথি: দুজন মানুষ শুধু মস্তিষ্কের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
- ইন্সট্যান্ট ট্রান্সলেশন: ভাষা বাধা দূর করে মস্তিষ্কের সংকেতকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা সম্ভব হবে।
৩. এন্টারটেইনমেন্ট ও গেমিং
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) ও অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR): শুধু চিন্তা করেই গেম বা VR ওয়ার্ল্ড কন্ট্রোল করা যাবে।
চ্যালেঞ্জ ও বিতর্ক
১. প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা
- সিগন্যালের নির্ভুলতা: মস্তিষ্কের সংকেত খুব জটিল, তাই ১০০% নির্ভুলভাবে ডিকোড করা কঠিন।
- ইমপ্লান্টের নিরাপত্তা: মস্তিষ্কে কোনো ডিভাইস স্থাপন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
২. নৈতিক ও গোপনীয়তা সংক্রান্ত সমস্যা
- মস্তিষ্কের ডেটা হ্যাকিং: যদি কেউ আপনার মস্তিষ্কের ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে, তাহলে এটি ভয়ানক প্রাইভেসি লঙ্ঘন হতে পারে।
- মানবতা বনাম যন্ত্র: মানুষ কি ধীরে ধীরে সাইবারগ হয়ে যাবে? এটি একটি বড় দার্শনিক প্রশ্ন।
ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?
ইলন মাস্কের মতে, আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে নিউরালিংক প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য হবে। প্রথমদিকে এটি শুধু মেডিকেল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলেও, পরবর্তীতে এটি দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
সম্ভাব্য টাইমলাইন
- ২০২৫: প্যারালাইসিস রোগীদের জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন।
- ২০৩০: সাধারণ মানুষের জন্য বাণিজ্যিকভাবে উন্মুক্ত।
- ২০৪০: টেলিপ্যাথি ও মেমরি আপগ্রেড সেবা চালু।
নিউরালিংকের মতো ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস প্রযুক্তি মানব সভ্যতাকে এক নতুন যুগে নিয়ে যাবে। এটি যেমন অসাধারণ সুযোগ এনে দেবে, তেমনি নতুন নৈতিক ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। তবে একথা নিশ্চিত যে, এই প্রযুক্তি মানুষের চিন্তা ও যোগাযোগের ধারণাই বদলে দেবে।
WhatsApp call schedule করবেন যেভাবে
Ghibli style AI দিয়ে ছবি তৈরি করার সম্পূর্ণ গাইড
2 thoughts on “মস্তিষ্ক থেকেই Phone calls করা যাবে কিভাবে”