ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে US stock market মূল্য ৪ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে

President Donald Trump শুল্ক আরোপের ফলে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে, US stock market অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় শেয়ার বাজারের বিক্রি কমেছে, যার ফলে গত মাসে S&P 500-এর শীর্ষ থেকে 4 ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যখন ওয়াল স্ট্রিট ট্রাম্পের বেশিরভাগ এজেন্ডাকে সমর্থন করছিল।
নতুন ট্রাম্প নীতির একের পর এক আগ্রাসী পদক্ষেপ ব্যবসা, ভোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে, বিশেষ করে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের মতো প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধে একের পর এক শুল্ক আরোপের ঘটনা।
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি এবং এর ফলে মার্কিন স্টক মার্কেটে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হ্রাস পাওয়ার ঘটনাটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।
১. ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পটভূমি
- প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর “America First” নীতির অধীনে বাণিজ্য নীতিতে বড় পরিবর্তন আনেন।
- তিনি বিশ্বাস করতেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক বাণিজ্যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ শুল্ক এবং বাণিজ্য ঘাটতির শিকার হচ্ছে, বিশেষ করে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারের সাথে।
- এই সমস্যা সমাধানের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ করে, বিশেষ করে চীনের উপর। ২০১৮ সালে চীনের উপর প্রথম ধাপে ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হয়, যা পরে বাড়িয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়।
২. শুল্ক নীতির উদ্দেশ্য
- বাণিজ্য ঘাটতি কমানো: ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, বিশেষ করে চীনের সাথে।
- মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া: বিদেশী পণ্যের উপর শুল্ক বাড়িয়ে দেশীয় শিল্পকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেওয়া।
- চীনের বাণিজ্য অনুশীলন পরিবর্তন: চীনের বৌদ্ধিক সম্পত্তি চুরি, জোরপূর্বক প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির মতো অনুশীলন বন্ধ করা।
৩. শুল্ক নীতির প্রভাব
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে মার্কিন স্টক মার্কেট এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নিম্নলিখিত প্রভাব পড়ে:
ক. মার্কিন স্টক মার্কেটে প্রভাব
- মূল্য হ্রাস: শুল্ক নীতির কারণে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় মার্কিন স্টক মার্কেটে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে S&P 500, Dow Jones এবং NASDAQ-এর মতো প্রধান সূচকগুলোর মূল্য হ্রাস পায়।
- বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস: বাণিজ্য যুদ্ধের অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দেয়, যার ফলে স্টক মার্কেটে বিক্রির চাপ বেড়ে যায়।
- ৪ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি: বিভিন্ন বিশ্লেষণ অনুযায়ী, শুল্ক নীতির কারণে মার্কিন স্টক মার্কেটের মূল্য প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস পায়।
চীনের ব্যাংকগুলিতে Deepseek AI শিকড় গেড়েছে
খ. বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব
- বাণিজ্য হ্রাস: শুল্ক নীতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য হ্রাস পায়, যা বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
- অর্থনৈতিক মন্থরতা: শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়ে, বিশেষ করে ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলো প্রভাবিত হয়।
- মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা: শুল্ক নীতির কারণে মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য মুদ্রার মানে ওঠানামা দেখা দেয়।
গ. মার্কিন ভোক্তা এবং ব্যবসায়িক খাতে প্রভাব
- মূল্য বৃদ্ধি: শুল্কের কারণে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যায়, যা মার্কিন ভোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
- উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি: অনেক মার্কিন কোম্পানি চীনে উৎপাদিত কাঁচামাল বা পণ্যের উপর নির্ভরশীল ছিল। শুল্কের কারণে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।
৪. চীনের প্রতিক্রিয়া
- চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, যা বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তোলে।
- চীন মার্কিন কৃষি পণ্য, যেমন সয়াবিন এবং পোর্কের উপর শুল্ক বাড়িয়ে দেয়, যা মার্কিন কৃষকদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়।
৫. স্টক মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
- শুল্ক নীতির কারণে স্টক মার্কেটে স্বল্পমেয়াদী অস্থিরতা দেখা দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন অর্থনীতি এবং স্টক মার্কেট পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
- তবে, এই নীতি মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করে, যা বিনিয়োগ এবং বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে মার্কিন স্টক মার্কেটে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হ্রাস পায়, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। যদিও এই নীতির লক্ষ্য ছিল মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া, তবে এর ফলে সৃষ্ট বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অনিশ্চয়তা মার্কিন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা হলো যে, বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন করার সময় বৈশ্বিক প্রভাব এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।