ফ্রিল্যান্সারদের জন্য Standard Chartered-এর বিশেষ সুবিধা: বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট খোলা

বহুজাতিক ব্যাংক Standard Chartered ফ্রিল্যান্সারদের জন্য চালু করেছে বিশেষ অ্যাকাউন্ট সেবা, যার নাম ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট’। এই অ্যাকাউন্ট খোলা ও পরিচালনায় কোনো ফি লাগবে না। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল—ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খুলে সেবা নিতে পারবেন।
এই অ্যাকাউন্ট খোলার সাথে সাথে একটি স্থানীয় (টাকা) এবং একটি বিদেশি মুদ্রার (ফরেক্স) অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। ফ্রিল্যান্সাররা তাদের আয়ের ৩৫% বিদেশি মুদ্রায় এবং বাকি অংশ টাকার অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে পারবেন। পাশাপাশি, তারা পাবেন একটি ডেবিট কার্ড, যা দিয়ে দেশ-বিদেশে লেনদেন করা যাবে। এছাড়াও, এই অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য ক্রেডিট কার্ড ও ব্যক্তিগত ঋণের সুবিধাও থাকবে।
রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান লুৎফুল হাবিব, কান্ট্রি হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী, এবং বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে বিটপী দাশ চৌধুরী বলেন, Standard Chartered ১২০ বছর ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে। এখন আমরা ডিজিটাল সেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা ও কাজের ধরন বিবেচনা করে এই নতুন সেবা চালু করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অনলাইনে পাওয়া যাবে।
ব্যাংকের আমানত বিভাগের প্রধান নাভিদ হাসান বলেন, এই সেবার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন, বিদেশ থেকে টাকা আনতে প্রয়োজনীয় ফরম সি পূরণ করতে পারবেন, এবং বিশ্বব্যাপী এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারবেন—সবই কোনো অতিরিক্ত ফি। এছাড়াও, ক্রেডিট কার্ড ও ঋণের সুবিধাও দেওয়া হবে। বাংলাদেশে অন্য কোনো ব্যাংক ফ্রিল্যান্সারদের এত সুবিধা দিচ্ছে না।
লুৎফুল হাবীব বলেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশে প্রথম এটিএম, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড চালু করে। আমরা স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক ও ডিজিটাল সেবা দিচ্ছি। বর্তমানে আমাদের ৭০% গ্রাহক ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা নিচ্ছেন, এবং গত দুই বছরে শাখায় গ্রাহক আগমন ৪৫% কমেছে।
তিনি আরও যোগ করেন, ফ্রিল্যান্সাররা দেশে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আনছেন। ভারতে পরেই বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং আয় বেশি। উন্নত দেশে শ্রমের মূল্য বেশি হওয়ায় এই খাতের আরও বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই বিশেষ অ্যাকাউন্ট সেবা চালু করেছি, যেখানে শুধুমাত্র সরকারি কর কাটা হবে, অন্য কোনো ফি নেই।
বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান বলেন, ফ্রিল্যান্সাররা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থেকে দেশের জন্য আয় করছেন। বিদেশ থেকে টাকা আনতে আগে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হতো, এখন এই সেবা পেলে এই পেশায় আসতে উৎসাহিত হবেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১০ লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাথে যুক্ত, এবং বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। তবে মাত্র ৩০% টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে আসে, কারণ ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত সহযোগিতা করে না। চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও আইনজীবীরাও এখন ফ্রিল্যান্সিং করছেন। এআইয়ের যুগে কিছু চাকরি কমলেও, এআই নিয়ন্ত্রণে ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা বাড়বে।
দেশে Mobile banking লেনদেনে রেকর্ড
Mobile phone ব্যবহারের সতর্কতা